Indian Cancer Treatment

+91 9051161900 / +8801744-415158

contact@indiancancertreatment.com

Blog

Lungs Cancer

আগের বিভিন্ন আর্টিকেল এ বিভিন্ন ক্যান্সার সম্বন্ধে আলোচনা করলেও কখনো ফুসফুসের ক্যান্সার বা ( লাং ক্যান্সার ) নিয়ে আলোচনা করি নি। আজকে আমরা একটু জানবো লাং ক্যান্সার সম্বন্ধে খুব সাধারণ ভাষায় এবং সবার বোধগম্য করে।

একটা চালু বা প্রচলিত ধারণাকে আগেই ভাঙা দরকার যে সিগারেট খেলেই ক্যান্সার হবে। সিগারেট স্মোকিং এ লাং ক্যান্সার এর একটা রিস্ক থেকে যায় সেটা কিন্তু সত্যি। আসলে আমরা এখন যে দূষিত বাতাসে শ্বাস নিচ্ছি এবং আমাদের খাদ্য দ্রব্যের সাথে যে পরিমানে ভেজাল ঢুকছে সেটা আমাদের শরীরের জিনের চরিত্র কে বার বার ঠোক্কর মারছে। আর এই ক্রমাগত উস্কানি তে যখন ই জিনের কাঠামো ও চরিত্র বদল হচ্ছে তখন ই ক্যান্সার হবার সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে। আসলে লাং ক্যান্সার ( যে কোনো ক্যান্সার ই ) যে কোনো মানুষের ই হতে পারে। তাই বলা যেতে পারে স্মোকার হলেই লাং ক্যান্সার হবে তার কোনো মানে নেই বরং অধিকাংশ লাং ক্যান্সার এর রুগী ই দেখা গেছে স্মোকার নন বা স্মোক করলেও বহু বছর বা যুগ আগেই স্মোক করা বন্ধ করে দিয়েছেন।

লাং ক্যান্সার প্রধানত নিম্নোক্ত তিনটি প্রকারের হয়।

ক) স্মল সেল লাং ক্যান্সার ( SCLC )

খ ) নন – স্মল সেল লাং ক্যান্সার ( NSCLC )

গ ) নিউরো এন্ডোক্রিন টিউমার অফ লাং ( NET )

এই তিন প্রকার ক্যান্সার এর ই চিকিৎসার থাম্ব রুলস বা পদ্ধতি আলাদা আলাদা।

ক) যখন আমাদের ফুসফুসের সুস্থ কোষ বা সেল গুলো অনিয়ন্ত্রিত ভাবে বিভাজিত হয়ে টিউমার বা নডিউল তৈরী করে বিশেষ করে লাংস এর মধ্যের নার্ভ সেল বা হরমোন নিঃসরণকারী কোষ গুলির মধ্যে তখন তাকে এই ধরণের ক্যান্সার এর গোত্রে ফেলা হয়। কারণ মাইক্রোস্কোপে এই ধরণের সেল গুলো কে দেখতে খুব ছোট বা ক্ষদ্র লাগে।

এই ক্যান্সার টিউমার গুলো যখন আকারে ও সংখ্যায় বাড়ে তখন আস্তে আস্তে আমাদের শরীরের সংবহনতন্ত্রের মাদ্ধমে ( রক্ত ও লসিকা সংবহন ) লসিকা গ্রন্থি ও অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পরে। এই ঘটনা কে বলে মেটাস্টিসিস।

এই ধরণের ক্যান্সার সেল গুলি যখন শরীরের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পরে তখন ছড়িয়ে পড়ার স্থান অনুযায়ী কিছু বিশেষ বিশেষ লক্ষণ বোঝা যায় যেমন – হাড়ে ব্যাথা , হেডেক , তলপেটে বা পিঠের দিকে ব্যাথা ( অনেক সময় গ্যাসের লক্ষণ বলে মানুষ ভুল করেন )। সেই জন্যই এই ধরণের যে কোনো লক্ষণ অনেক দিন ( প্রায় মাসাধিক কাল ) থাকলেই যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া উচিত , ফেলে না রেখে।

খ ) এই ধরণের ক্যান্সার গুলি সাধারণত দেখা যায় লাংস এর এপিথেলিয়াল সেল লেয়ার এ। এপিথেলিয়াল সেল লেয়ার হোলো লাংস এর অভ্ভন্তরীন যে দেয়াল , তার প্রোটেক্টিভে লেয়ার। আডেনোকার্সিনোমা, স্কোয়ামাস সেল কার্সিনোমা এই গোত্র ভুক্ত।

গ ) এই তৃতীয় শ্রেণীর লাংস ক্যান্সার দেখা যায় লাংস এর মধ্যে হরমোন তৈরী করার গ্লান্ড এবং নার্ভ সেল গুলোর মধ্যে। এদের কে বলে কার্সিনোইড। সাধারণ ভাবে আমাদের শরীরে লাংস এর মধ্যে এই ধরণের নিউরো এন্ডোক্রিন গ্লান্ড গুলি নিউরোপেপ্টাইড ও আমাইন্স ( এক ধরণের প্রোটিন ) সিক্রেট করে অল্প পরিমানে। কিন্তু যখনি এই ধরণের সিক্রেশনের পরিমান বহুলাংশে বেড়ে যায় , ক্যান্সার এর দিকে টার্ন নেয়।

কার্সিনোইড থাকলে বিশেষ করে যে লক্ষণ গুলি দেখা যায় সেগুলি হোলো – মুখমণ্ডলে হটাৎ করে ফ্লাশিং মানে মুখমন্ডল লালচে হয়ে ওঠা ও উত্তাপ ফিল করা , ডায়রিয়া , অত্যধিক ঘাম হওয়া , নিস্বাসের অসুবিধা, হাঁচি , হার্ট বিট বেড়ে যাওয়া , উচ্চ আর ফ্লাকচুয়াটিং ( অস্থিতিশীল ) রক্ত চাপ।

লাংস ক্যান্সার এর সাধারণ লক্ষণ সমূহ :-

( নিচের লক্ষণ গুলি থাকা মানেই ক্যান্সার নয় , কিন্তু এই ধরণের ক্যান্সার এর সাধারণত এই লক্ষণ গুলোই দেখা যায় )

অবসন্নতা , কাশি , নিশ্বাস নেয়ার সময় অসুবিধা , বুকে ব্যাথা ( পাঁজরের নিচে ), খিদে / ওজন কমে যাওয়া , কাশির সাথে মিউকাস বা শ্লেষা বের হওয়া , কাশির সাথে রক্ত , ঘাড় বা গলার লসিকা গ্রন্থি গুলির ফোলা।

অনেক সময় ই এই গোত্রের ক্যান্সার চট করে ধরা পরে না। সাধারণত বুকে ব্যাথা বা ডোম আটকে আসছে এই ধরণের অনুভূতি নিয়ে রুগী আগে যান কার্ডিওলজিস্ট বা চেস্ট ফিজিসিয়ান এর কাছে। তারপর এক্স – রে বা সিটি স্ক্যান করে এবং তার সাথে ব্লাড টেস্ট করার পর ধরা পরে।

সামগ্রিক ভাবে লাংস ক্যান্সার এর ট্রিটমেন্ট এ প্রাধান্য দেয়া হয় কেমো থেরাপি , টার্গেটেড সেল থেরাপি বা উভয় কম্বিনেশন , রেডিও থেরাপি এবং সার্জারি। আমাদের লাংস এ সর্বমোট ৫ টি লোব বা খন্ড থাকে। ডান দিকের লাংস এ ৩ টি, বাম দিকের লাংস এ ২ টি। সার্জারির সময় আধুনিক পদ্ধতিতে এক বা একাধিক লোব বাদ দেয়া হয় টিউমার তা কে পুরোপুরি বের করে আনার জন্য।

লাংস ক্যান্সার সাধারণত ধরা পরে বা হয় একটু বেশি বয়েসের দিকে। দেখা গেছে ৬০ থেকে ৭০ বছর বয়েস এই এটা বেশি প্রকট হয় যার কারণ আজ ও অজানা।

লাংস ক্যান্সার এর স্টেজিং ( মানে কি পর্যায়ে আছে ) এবং স্প্রেড ( কত টা ছড়িয়েছে ) এর উপর নির্ভর করে রুগীর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা যাকে মেডিকেল পরিভাষায় বলা হয় সারভাইভাল রেট।

আসুন এটা নিয়ে একটু আলোচনা করা যাক।

লাংস ক্যান্সার এর স্টেজিং এবং সারভাইভাল রেট : –

( ক্যান্সার এর ক্ষত্রে সাকসেস বিচার করা হয় ৫ বছরের সারভাইভাল রেট দিয়ে অর্থাৎ , ক্যান্সার এর ট্রিটমেন্ট হবার ৫ বছর পরেও কত শতাংশ রুগী বেঁচে আছেন বা সুস্থ আছেন )

স্টেজ-১ – এই ক্ষেত্রে ক্যান্সার কেবল মাত্র একটি লাংস এই সীমাবদ্ধ। এই ক্ষেত্রে সারভাইভাল রেট হোলো ৭০ থেকে ৯০ %।

স্টেজ ২- এই ক্ষেত্রে ক্যান্সার একটি লাংস ছাড়াও আশেপাশের লসিকা গ্রন্থি গুলি কে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এই ক্ষেত্রে সারভাইভাল রেট হোলো ৫০ থেকে ৬৫ %।

স্টেজ ৩- এই ক্ষেত্রে ক্যান্সার একটি লাংস , আশেপাশের লসিকা গ্রন্থি ছাড়াও বুকের মদ্ধভাগে ছড়িয়ে পরে। এই ক্ষেত্রে সারভাইভাল রেট হোলো ২৫ থেকে ৪০ %।

স্টেজ ৪ – এই ক্ষেত্রে দুটি লাংস ই ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং লাংস ছাড়াও অন্যান্য অভ্ভন্তরীন অঙ্গেও ছড়িয়ে পরে। এই ক্ষেত্রে সারভাইভাল রেট হোলো খুব বেশি হলে 10 % এর ভিতরে ।

অর্থাৎ এটা দেখে যেটা সামগ্রিক ভাবে বোঝা যায় এবং যেটা আগেও বহু আর্টিকেল এ বলেছি যে ক্যান্সার এর ট্রিটমেন্ট যত তাড়াতাড়ি শুরু করা যায় ততো মঙ্গোল এবং ততটাই বেশি সংখক রুগী কে স্টেজ প্রগ্রেসন থেকে বাঁচিয়ে বেটার সারভাইভাল রেট এর দিকে নিয়ে যাওয়া যাবে।

আর এই দ্রুত ট্রিটমেন্ট করতে গেলে যেটা প্রথোমেই করতে হবে ( শুনতে খুব অদ্ভুত লাগলেও, এটাই সত্যি ) সেই সমস্ত নামি হাসপাতাল এড়িয়ে চলুন যেখানে গেলে চিকিৎসা শুরু করতে মাসাধিক কাল লাগে এবং সার্জারির প্রয়োজনে সার্জারির ডেট পেতেও মাসাধিক কাল লাগে। কারণ জানবেন , আপনি বসে থাকতে পারেন, ডাক্তার অন্য রুগী কে দেখতে ব্যস্ত হতে পারেন, হাসপাতাল এ অপারেশনের ডেট অমিল হতে পারে , কিন্তু ক্যান্সার এতো শত বোঝে না। সে থেমে থাকে না , এগিয়েই চলে। সুতরাং নিজে সচেতন হোন আর অপরকেও এই ভুল ট্রেন্ড সম্বন্ধে সচেতন করুন। তবেই ক্যান্সার এ মৃত্যুর হার আমরা কমাতে পারবো।

ধন্যবাদ।

Quick Links

Services