Indian Cancer Treatment

+91 9051161900 / +8801744-415158

contact@indiancancertreatment.com

আমার কোলন ক্যান্সার ধরা পড়েছিল দেশে। খুব কঠিন সময় সেটা। আমার চিন্তায় মাথা কাজ করছিলো না। মনে হইতেছিল যে আর দুই দিন পরেই মরে যাবো। আব্বা, আম্মু, আমার বউ, পোলাপান রা কান্না শুরু করে দিয়েছিলো। ঢাকায় গেছলাম, ডাক্তার স্কান করেই অপারেশন করতে বললো। ভয় পাচ্ছিলাম। তাই আবার গেলাম আরেক নাম করা ডাক্তারের কাছে। উনারা দেখে বললেন ১২ টা কেমো দিতে হবে। এবার মাথা নষ্ট হয়ে গেলো। কেউ কয় সার্জারি তো কেউ কয় কেমো ! এ কেমন চিকিৎসা ! চাচা ,খালু রা বললো ইন্ডিয়া তে টাটা তে যেতে। পাসপোর্ট ছিলোই, ভিসা করতে দিচ্ছিলাম সবে, এমনসময় মনে পরে ফেইসবুকে রানা দাদা কে , 2020 সালে আমার আপুর ব্রেস্ট ক্যান্সার চিকিৎসার সময় উনি ই হেল্প করেছিলেন। ওনার কাছ থেকে সন্ধান পাই ইন্ডিয়ান ক্যান্সার ট্রিটমেন্ট এর। রানা দাদা ওই খানে কোনো বড়ো পোস্টে আছেন। ওনার কথা দেখেছি ইন্ডিয়ান ক্যান্সার ট্রিটমেন্ট এর সবাই শোনে, এমন কি হাসপাতালের সবাই ও ওনাকে খুব মানে। উনি কিছু ফোন করে বলে দিলে ডাক্তার বাবু ও সাড়া দেন। এটা আমার অভিজ্ঞতা বললাম। জানি লেখা টা একটু বড়ো হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আসলেই বেঁচে ফেরার আনন্দে পুরোটা লিখতে চাইছি।
রানা দাদা আর ইন্ডিয়ান ক্যান্সার এর বনলতা আপু সবসময় আমাদের পাশে ছিলেন। অনারা আমাকে মেডিক্যাল অপিনিয়ন দেন, এবং যে হাসপাতালে আমাদের রেকমেন্ড করেন সেটার নাম শুনে আমার চাচা রা বলেন দালাল দের কথা না শুনতে। আসলেই আমাদের এখানে বয়স্ক মানুষ রা ক্যান্সার ব্যাপারে ধারণাই রাখেনা আর দালাল শব্দের মানেই জানে না। কারণ ইন্ডিয়ান ক্যান্সার ট্রিটমেন্ট ও রানা দাদা রা আমার জীবন বাঁচিয়েছেন। কোথায় দালাল আর কোথায় আসল মানুষ এনাদের মতো। আমি অনড় ছিলাম যে রানা দাদা যেখানে বলেছেন সেখানেই যাবো।
ভিসা করে ওনাদের টিকেট পাঠিয়ে দেই। আমার সাথে আমার বউ ছাড়া কেউ ছিলো না। আমার বউ ভয় পাচ্ছিল যে আমাকে হাসপাতালে ভর্তি করলে ও কীকরে একা থাকবে ! আমার সমস্যা রানা দাদা কে জানালে ওনারা কলকাতা থেকে আমাদের সাথে অর্পিতা আপু কে দিয়ে দেন। সেই খরচ অবশ্য দিতে হয়েছে। কিন্তু তার বদলে যা সাহায্য পেয়েছি সেটা তো ভোলার নয়। অর্পিতা আপু আমাদের সাথেই কলকাতা থেকে চেন্নাই যান। আমাদের রিসিভ করার জন্য গাড়ি ছিল। গাড়ি আমাদের আগে থেকে ঠিক করে দেওয়া গেস্ট হাউসে নিয়ে যায়। দৈনিক ১৫০০ টাকায় খুব ই সুন্দর বাসা, পরিবেশ ও দারুন। সামনেই হাসপাতাল। পরেরদিন হাসপাতালে দেখানোর পর আগেই আমাকে পেট সিটি দিলো। বাংলাদেশে আমার অভিজ্ঞতা বলার পর ওখানে ডাক্তার রা কিছু বললেন না, শুধু হাসলেন। অর্পিতা আপু সব কিছু ডাক্তার আর আমাদের বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন।
পেট সিটি এর রিপোর্ট আসার পর আমার বাওপসি স্লাইডের একটা রিভিউ ওনারা করার পর, সোজা সার্জারির পরামর্শ দিলেন।
প্যাকেজ এসেছিল প্রায় ৮ লাখ এর, রানা দাদা ওটা কে কমিয়ে ৬.৭৫ লাখ করে দিয়েছিলেন। আমার সার্জারির পর আমাকে ৮ দিন হাসপাতালে থাকতে হয়েছিলো। আমার বউ কে সেই সময় নিজের আপুর মতো আগলে রেখেছিল অর্পিতা আপু।
ডিসচার্জ এর পরে ফাইনাল বায়োপসি রিপোর্ট আসার পর আমাকে রেডিয়েশন আর কেমো এর একটা কম্বো দিতে হয়েছিল পরবর্তী একমাস ধরে আর পেটে একটা ব্যাগ দেওয়া হয়েছিল। ওই ব্যাগ নিয়েই আমরা দেশে ফিরে আসি। তিন মাস পর আবার ফিরে গিয়ে ছোট অপারেশন করে ব্যাগ টা খুলে দেওয়া হয়।
এখন আমি ভালো আছি, আমরা ভালো আছি। আমি স্বাভাবিক জীবন যাপন করি। কোনো অসুবিধা হলে রানা দাদা রা সরাসরি ডাক্তার বাবু দের সাথে ভিডিও তে কথা বলিয়ে দেয়। আমার আবার ফোলো আপ আছে এক বছর পর।
এই হলো আমার অভিজ্ঞতা।
ক্যান্সার নিয়ে রানা দাদা আর ওনার টিম মানে ইন্ডিয়ান ক্যান্সার ট্রিটমেন্ট এর যা জ্ঞান আর সব হাসপাতালের সাথে যা সম্পর্ক , তেমন টা আর কারোর পক্ষে থাকা মনে হয় সম্ভব না কারণ ওদেশে যাবার আগে আমাকে রানা দাদা যেভাবে চিকিৎসা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত হবে বলে বুঝিয়েছিলেন, ওখানে ডাক্তার রাও একদম সেভাবেই চিকিৎসা করেছেন। রানা দাদা ডাক্তার কিনা জানি না, ওনার সাথে কলকাতার অফিসে একবার ই দেখা হয়েছিল, কিন্তু ওই দেখা তেই বোঝেছিলাম উনি সাধারণ মানুষ নন, দেখলেই একটা সম্মান জাগে মনে।
রানা দাদা, বনলতা আপু আর অর্পিতা আপু, আপনারা সবাই ভালো থাকবেন। আমি আজীবন আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবো।
আর সবাই কে বলি, ক্যান্সার হলে নিজের ছাড়া আর কারোর কথা শুনবেন না, পরিজন দের কথা তো এক্কেবারে না। চোখ বন্ধ করে ইন্ডিয়ান ক্যান্সার ট্রিটমেন্ট দের সাথে যোগাযোগ করবেন। সুস্থ হবেন নিশ্চিত।

Ehsanul Haque , Rangpur, Bangladesh