Indian Cancer Treatment

Blog

Tongue Cancer

আজকে আলোচনা করবো জিহ্বার ক্যান্সার ও তার রি কন্সট্রাক্টিভ সার্জারি নিয়ে।

জিহ্বার ক্যান্সার এর চিকিৎসার ধাপ গুলি হলো সার্জারি, কেমো আর রেডিওথেরাপি। কখনো কখনো কেমো আর রেডিওথেরাপি একসাথেও দেয়া হয়। কিনতু কতখানি সার্জারি করা হবে বা কি ধরণের পোস্ট সার্জারি ট্রিটমেন্ট চলবে সেটা নির্ভর করে জিহ্বার ক্যান্সার কতখানি ছড়িয়েছে তার উপর।

চিকিৎসার ধরণ :

জিহ্বার প্রথম তিন ভাগের দুই ভাগ এর কোনো অংশ যদি ক্যান্সার আক্রান্ত হয়, তাহলে ওরাল ক্যান্সার এর প্রটোকল এ ট্রিটমেন্ট করা হয়।

খুব প্রাথমিক স্টেজ এ যেখানে ক্যান্সার এর ঘা ৪ সেন্টিমিটার এর মধ্যে এবং কেবল মাত্র জিহ্বার উপরে সেখানে সব থেকে সহজ উপায় হলো সার্জারি করে জায়গা তা রিমুভ করে দেয়া। এর সাথে অনেক সময় ঘাড়ের কাছের লিমফ নোড বা গ্লান্ড কেও রিমুভ করা হয়। আর ৪ সেন্টিমিটারের বেশি ঘা থাকলে বা যদি জিহ্বার বাইরেও মুখের অন্যান্য অংশে ঘা ছড়িয়ে পরে তাহলে সম্ভাব্য সকল প্রকার অপসন ট্রাই করা হয়।

জিহ্বার শেষের ৩ নম্বর ভাগ এ ক্যান্সার হলে তাকে ওরোফেরিঞ্জিয়াল ক্যান্সার এর মডেল এ চিকিৎসা করা হয়। তবে এই অংশের চিকিৎসা একটু হলেও বেশি জটিল জিহ্বার সামনের ভাগের তুলনায়।

এই ধরণের জিহ্বার ক্যান্সার এর সার্জারি মাইনর না মেজর সেটা নির্ভর করে আলসার এর সাইজের উপর। খুব ছোট আকারের ঘা বা আলসার হলে সেটা স্থানীয় এনেস্থেসিয়া দিয়ে লেসার ট্রিটমেন্ট এর সাহায্যেও ডে কেয়ার এর মাদ্ধমে ট্রিট করা হয়। আর যদি আলসেরাস এরিয়া বড় হয় তখন জিহ্বার একটা অংশ এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে গোটা জিহ্বা টাই অপারেট করে রিমুভ করা হয়। একে বলে গ্লাসেক্টমি । এর পরবর্তী ক্ষেত্রে অনেকে চাইলে জিহ্বার রিকন্সট্রাকশন করাও হয়ে থাকে।

জিহ্বার ক্যান্সার সার্জারির সময় সার্জেন রা ক্যান্সার ঘা বা টিউমারের সাথে সাথে কিছুটা ভালো অংশ ও কেটে বের করে আনেন যেন কোনো ক্যান্সার টিস্যু ভিতরে থেকে না যায় সেই জন্য। একে বলে প্রাইমারি টিউমার রিসেকশন ।

সার্জারির পরে টিউমার টি ল্যাবরেটরি তে পাঠানো হয় দেখার জন্য যে সেখানে কি ধরণের সেল আছে। এই ক্ষেত্রে যদি মার্জিনাল অংশে ক্যান্সারাস সেল না থাকে তখন তাকে বলা হয় ক্লিয়ার মার্জিন।

এই প্রাইমারি টিউমার রিসেকশন কয়েক রকম টাইপের হয়। যদি ক্যান্সারাস জায়গা টি সহজেই বাইরে থেকে অপারেট করা যায় তখন তাকে বলে ট্রান্সওরাল সার্জারি। সাধারণত ট্রান্সওরাল লেসার মাইক্রোসার্জারি ( TLM ) এবং ট্রান্সওরাল রোবটিক সার্জারি ( TORS ) এই দুই ধরনের ট্রান্সওরাল সার্জারি হয়। তবে অনেক সময় যদি টিউমার জিহ্বার পিছন দিকে থাকে এবং বাইরে থেকে পৌঁছানো না যায় তখন সার্জারি করা হয় ঘরের বা চোয়ালের একটা অংশ কেটে ।

টাং বা জিহ্বার রিকন্সট্রাক্টিভ সার্জারি টি বেশ জটিল যদিও এটা একটা কমন ক্যান্সার সার্জারির মধ্যেই পরে। এই ক্ষেত্রে শরীরের অন্য কোনো জায়গা থেকে মাংস কেটে নিয়ে জিহ্বার পুনর্গঠন করা হয়। তবে এই ধরণের অন্য অংশথেকে কাটা পার্ট কে বলে ফ্ল্যাপ। সাধারণত দুই ধরণের ফ্ল্যাপ সার্জারি করা হয়। ALT – মানে এন্টারল্যাটেরাল টাইট ফ্ল্যাপ এবং RFF – মানে রেডিয়াল ফোর আর্ম ফ্ল্যাপ । যদিও ক্ষেত্র বিশেষে এক এক জনের এক একটা বেশি সুইট্যাবল হয় তবুও সব থেকে বেশি পসিটিভ ফিডব্যাক পাওয়া যায় ALT ফ্ল্যাপের ক্ষেত্রে।

স্টাডি এর মতে জিহ্বা রিকন্সট্রাকশন করার পর ও পরবর্তী ৫ বছরে রুগীর বেঁচে থাকার হার প্রায় ৭৫% এর কাছাকাছি। তবে এই ক্ষেত্রেও একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো কতটা তাড়াতাড়ি ক্যান্সার ধরা পড়েছে এবং কত তাড়াতাড়ি সার্জারি হয়েছে । যে ব্যক্তির প্রথম পর্যায়ে মৌখিক বা ফেরেঞ্জিয়াল ক্যান্সার ধরা পড়ে তার 5 বছরেরও বেশি সময় বেঁচে থাকার 83 শতাংশ সম্ভাবনা থাকে। এই পর্যায়ে প্রায় 31 শতাংশ ক্ষেত্রে রোগ নির্ণয় করা যায় । যাদের ক্যান্সার শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে তাদের ক্ষেত্রে 5 বছরের বেশি বাঁচার সম্ভাবনা 38 শতাংশ।

সেই জন্যই আমি যেতে বার বার বলি ক্যান্সার ট্রিটমেন্ট এর ক্ষেত্রে , আসুন সেই মূল মন্ত্র তা ঝালিয়ে নেই একবার।।।।।।।।।

১। ক্যান্সার যত তাড়াতাড়ি শনাক্তকরণ হবে টোটো তার বেশি দিন সুস্থ থাকার সম্ভাবনা যদি তাড়াতাড়ি চিকিৎসা শুরু করা যায়।

২। ক্যান্সার শনাক্তকরণ হলে পাসপোর্ট ভিসা এর জন্য অপেক্ষা না করে দেশেই ট্রিটমেন্ট শুরু করে তার পরে পাসপোর্ট ভিসা পেলে অন্য জায়গায় নিতে হলে নিয়ে যাবেন। কিন্তু আগে চিকিৎসা শুরু করতে হবে।

৩। এমন হাসপাতাল এ নেবেন না ( সে যত বিখ্যাত ই হোক ) যেখানে চিকিৎসা শুরু হতেই ১০/১৫ দিন লাগে আর সার্জারির ডেট পেতেই মাস পেরিয়ে যায়। জানবেন এই ১৫ দিন বা এক মাস সময় তও কিন্তু আপনার রুগীর জীবনকাল বাড়াতে বা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

এই ধরণের ওরাল ক্যান্সার অপারেশন এবং জিহ্বার রিকন্সট্রাক্টিভ সার্জারির খরচ হাসপাতালের চরিত্র ও বাকি সার্জারি পরবর্তী রেডিয়েশন টেকনিকের উপর নির্ভর করে ৩/৪ লক্ষ থেকে শুরু করে ১০/১২ লক্ষ পর্যন্ত হতে পারে। তবে আধুনিক IMRT রেডিয়েশন টেকনিক (intensity modulated radiotherapy) ব্যবহার করলে খরচ আর একটু বাড়তেও পারে তবে তাতে আরো ভালো ফলাফল আশা করা যায়।

আশা করি মুখ গহ্বরের এবং জিহ্বার ক্যান্সার ও তার সার্জারির সম্বন্ধে একটা সম্মক ধারণা দিতে পারলাম। বিশদে কারোর যদি জানার ইচ্ছে থাকে তবে যোগাযোগ করতে পারেন।

ধন্যবাদ।

Quick Links

Services